How to navigate complext reality

বাস্তবতাকে আমরা কতটুকু বুঝতে পারি এবং
কীভাবে কঠিন সময় পাড়ি দেয়া যায়?

১৯৭১ সালে স্টান্ডফোর্ড ইউনিভার্সিটি'র সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ডঃ ফিলিপ জিম্বারডো একটা মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা করেন, যেটা স্টান্ডফোর্ড প্রিজন এক্সপেরিমেন্ট নামে বেশ পরিচিত। এই নিরীক্ষার অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টের আন্ডারগ্রাউন্ডে একটি সাজানো কারাগার তৈরি করেন। এবং তার ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্টদের মাঝ থেকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যারা আগ্রহী ছিল তাদেরকে দুইটি দলে ভাগ করেন।


নিরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে নেয়া পরীক্ষায় এইসব ছাত্ররা সবাই মানসিকভাবে সুস্থ স্বাভাবিক হিসেবে চিহ্নিত হয়। একটা কয়েন টস করে স্বেচ্ছাসেবী ছাত্রদেরকে কারাবন্দি ও কারারক্ষী এই দুই গ্রুপে ভাগ করা হয়।


এবার তাদেরকে সত্যিকারের কারাবন্দি বা কারারক্ষীর মত পোশাক পরিয়ে বানানো কারাগারে দিয়ে দেয়া হয়। শুরুতে সবার জন্য বিষয়টা খুব অদ্ভুত একটা মানসিক অবস্থা তৈরি করে, এমনকি সবাই বেশ মজা পাচ্ছিল। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি সবার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছিল। কারাবন্দীরা নিজেদেরকে সত্যিকার ভাবে বন্দী মনে করা শুরু করল এবং কারারক্ষীরাও তাদের আসল মেজাজে পৌঁছে গেল।


অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছালো যে, কারাবন্দিরা ছোটখাটো বিদ্রোহ করার চেষ্টা করল, প্রতিবাদ আয়োজন করলো, একে অন্যদের সাথে মারামারিতে লিপ্ত হলো যেমনটা আসল কারাগারে হয়ে থাকে। এদের মাঝে কারোর ছোটখাটো মানসিক বৈকল্যও দেখা দিল।


অন্যদিকে কারারক্ষীরাও নিজেদেরকে সত্যিকারের গার্ড মনে করা শুরু করল। তারা কারাবন্দিদের শায়েস্তা করার জন্য বিভিন্ন রকম মানসিক শাস্তি বের করল, তাদের জন্য " শাস্তির রুম" বানালো, এমনকি কারাবন্দিদের মাঝে কোনদল লাগিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করল। পুরো ব্যাপারটাই খুব বিদঘুটে রকমের অদ্ভুত - কারণ এই কারারক্ষীরা প্রতিদিন তাদের আট ঘণ্টার স্বেচ্ছাসেবী ডিউটি ছেড়ে বাসায় যেতে পারত।


একবার ভেবে দেখুন, টসের সময় কয়েনটা উল্টা দিকে ঘুরলে এসব কারাবন্দিরাই হতেন কারারক্ষী, এবং কারারক্ষীরা কারাবন্দি। এই নিরীক্ষার পুরো পরিস্থিতি বদলে এত দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছিল যে দুই সপ্তাহের নিরীক্ষাটি ছয় দিনে শেষ করতে হয়েছিল।


স্টান্ডফোর্ড প্রিজন এক্সপেরিমেন্ট থেকে আপনি কি উপসংহারে পৌঁছাবেন সেটা আমার জানা নেই, তবে আমার Takeaway টা আপনার সাথে শেয়ার করি।

আমাদের পরিবেশ আমাদেরকে প্রভাবিত করে এবং একই সাথে আমরাও আমাদের পরিবেশকে প্রভাবিত করি। এই প্রভাবের মাত্রাকে বেশিরভাগ সময় আমরা আন্ডারস্টিমেট করি।

একটা পরিবারের বাস্তবতায় আপনি হয়তো একজন বাবা কিংবা মা, আপনার এই ভূমিকা আপনি কি চিন্তা করছেন এবং কিভাবে চিন্তা করছেন দুটোকেই প্রভাবিত করছে। আবার আপনার কর্মক্ষেত্র একইভাবে আপনাকে প্রভাবিত করছে, এবং আপনিও আপনার কর্মক্ষেত্রের বিভিন্ন মানুষ এবং উপাদানগুলোকে প্রভাবিত করছেন।


মানুষ হিসেবে আমরা এ ধরনের কন্টেক্সটের বাইরে গিয়ে কোন কিছু সঠিকভাবে বিচার বিবেচনা করতে পারি না, এটা আমাদের সৃষ্টিগত সীমাবদ্ধতা। কোন জিনিস আমাকে কতটা প্রভাবিত করছে এবং আমি কতটা প্রভাবিত করছি এগুলো ঠিকমত বিচার করাও আমাদের পক্ষে অসম্ভব।


তাহলে এরকম অসম্ভব পরিস্থিতিতে আমরা কিভাবে জীবন-পরীক্ষা পাড়ি দিব? এ সম্ভাব্য কয়েকটি উত্তর আছে।

- আপনি স্রষ্টার দেয়া প্রেসক্রিপশন, যাকে আমরা ধর্ম নামে চিনি সেটা অনুসরণ করতে পারেন
- নিজেকে বোঝা, নিজের চিন্তার প্যাটার্ন খুঁজে বের করা একটা পথ হতে পারে। এতে আপনি পুরোপুরি সফল না হলেও অনেকটাই ধারণা পাবেন আপনি আসলে কি রকম এবং কিভাবে চিন্তা করেন
- আশেপাশের কারো কাছ থেকে হেল্প নিতে পারেন, যিনি আপনাকে দেখছেন বা আপনার কথা শুনছেন তিনি আপনার বাস্তবতার সাথে আপনার মত করে Emotionally aligned না। তাই আপনার ব্যাপারে উনার বক্তব্য সঠিক হওয়া সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত বেশি


উপরে দেয়া অপশন গুলোর কোনটাই Mutually exclusive না, বরং সবগুলো একসাথে ব্যবহার করা যায়।


দাম্পত্য, পারিবারিক জীবন, মাতৃত্ব বা পিতৃত্ব এগুলোতে আপনি বিভিন্ন রকম ভূমিকা পালন করেন, বিভিন্ন জটিল সময় পাড়ি দেন। আপনি এবং আপনার স্বামী/স্ত্রী এইসব পরিস্থিতিতে Emotionally invested থাকেন। তাই অনেক সংঘাতমূলক সময়ে পরিস্থিতি বোঝা, সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নাও হতে পারে।


দুটো পরিস্থিতি বিবেচনা করুনঃ
(১) লেবার পেইন উঠার পরে ঠিক কোন সময় হাসপাতালে যাওয়া উচিত
(২) বাচ্চা হয়ে যাওয়ার পরে আপনার স্বামী/স্ত্রী আপনার ব্যাপারে আগের মত আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

এই দুই পরিস্থিতিতে একজন প্রফেশনাল ( দৌলা অথবা মেন্টাল হেলথ কাউন্সিলর) আপনাকে যেভাবে হেল্প করতে পারবেন সেটা আপনি নিজে হয়তো পারবেন না। কারণ তিনি আপনার বাস্তবতায় আপনার মত করে 'জড়িত' (invested) নন।

prenatal course batch 6 announcement

মাতৃত্ব সাইটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক লেখাগুলোঃ

আমাদের রেকর্ড কোর্সে ভর্তি হতে পারেন সারাবছর!


- মাতৃত্ব প্রিনেটাল কোর্স (১০০০/-)
- শিশুর সলিড খাবার (২৫০/-)

- মা হবার আগে মেয়েদের পুষ্টি (২০০/-)

ভর্তি হতে নক করুনঃ মেসেঞ্জার / হোয়াটসঅ্যাপ



মাতৃত্ব পরিবারের একজন হিসেবে আপনি এই মেইল পাচ্ছেন।

মাতৃত্ব ডট কম
বাসা:১/বি, ভবন: ৭, স্বপ্নডাঙ্গা হাউজিং হাজারিবাগ, ঢাকা-১২০৭
https://matritto.com

ইমেইল পাওয়া বন্ধ করতে চান? আনসাবস্ক্রাইব

নিউজলেটার স্পন্সর করতে চান?